10.4 C
London
October 27, 2024
TV3 BANGLA
বাকি বিশ্ব

দেহ ব্যবসার জন্য বাংলাদেশ থেকে নারী পাচার, অন্যতম গন্তব্য ভারতের গোয়াঃ গবেষণা

ভারতের গোয়ায় জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় যত নারী পাচার করে নেওয়া হয়, তার অন্যতম উৎস বাংলাদেশ। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশ নেপাল এবং আফ্রিকার উগান্ডা ও কেনিয়া থেকেও নারী পাচার করে আনা হয় ভারতের এই অঞ্চলে। এ ছাড়া ভারতের মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ও উত্তর প্রদেশ থেকেও বিপুল পরিমাণ নারী পাচার করে গোয়ায় নিয়ে তাদের জোরপূর্বক যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয়।

গোয়ায় যৌন ব্যবসার জন্য নারী পাচারের বিষয়ে অন্যায় রহিত জিন্দেগি বা এআরজেড নামে একটি বেসরকারি সংস্থা গোয়া পুলিশের সঙ্গে মিলে এ বিষয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণার শিরোনাম, ‘রিপোর্ট অন কমার্শিয়াল সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন ইন গোয়া—সিচুয়েশন অ্যান্ড ইন্টারভেনশন (২০১৯-২০২৪)।

গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এআরজেড। অনুষ্ঠানটিতে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত উপস্থিত ছিলেন। সংস্থাটি ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে গোয়া পুলিশ নারী পাচারসংক্রান্ত যেসব অভিযান পরিচালনা করেছে, তার মধ্য থেকে ৭৫টি নিয়ে গবেষণা করেছে।

গবেষণায় গবেষকেরা ‘উৎস রাষ্ট্র/রাজ্য’ বলতে এমন একটি এলাকাকে বুঝিয়েছেন, যেখান থেকে নারীদের পাচার করে আনা হয়েছে। তবে এসব নারীর জন্মস্থান যে সেই দেশ বা ভারতীয় রাজ্যেই হবে এমনটা নির্দেশ করেননি তারা।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত গোয়ার মানব পাচার ও যৌন ব্যবসা চক্রের হাত থেকে ১৭২ জন নারী ও শিশু-কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৮ জন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের এবং ৩৪ জনকে বাংলাদেশ, ভুটান, কেনিয়া, কিরগিজস্তান, তুর্কমিনিস্তান, নেপাল, উগান্ডা ও উজবেকিস্তান থেকে আনা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচারের পদ্ধতি ও নিদর্শনগুলো অনেক বেশি সংগঠিত। সামাজিক মাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোর উন্নতি পাচারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি সহজ করে দিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীকে গোয়ার বিভিন্ন ক্লাব, বার, হোটেল ও ক্যাসিনোতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের ওয়েট্রেস, নৃত্যশিল্পী বা ক্লায়েন্টদের জন্য সঙ্গী হিসেবে ভূমিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একবার গোয়ায় আনার পর তাদের যৌন কার্যকলাপে বাধ্য করা হয়।

নারী পাচারের উৎস হিসেবে মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, নেপাল ও বাংলাদেশ প্রধান ভূমিকা পালন করছে বলেও উল্লেখ করা হয়। তবে নতুন অঞ্চলগুলো হলো—উত্তর প্রদেশ, কেনিয়া ও উগান্ডা। গোয়া যৌন পাচারের একটি গন্তব্য হয়ে উঠছে। কারণ সেখানে চাহিদা বেশি, টাকার লেনদেন বেশি এবং কাজের শর্ত তুলনামূলক সহজ।

গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাচারের শিকার নারী তাদের পরিবারের জন্য প্রধান আয়ের উৎস। তাদের বেশির ভাগই সীমিত আয়ে পরিবার চালাতেন এবং অনেকেই মহামারির সময় চাকরি হারিয়ে কঠিন শর্তে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন। অনলাইন বিজ্ঞাপন মানব পাচার বাড়তে সহায়তা করেছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। কারণ অনলাইন প্ল্যাটফরম পাচারকারীদের নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখার সুযোগ দেয়।

তথ্যসূত্রঃ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এম.কে
২৬ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

অবশিষ্ট বড় মসজিদও বদলে দিল চীন

টিকটকের নতুন নিয়ম, মুছে যাবে ভিডিও

মসজিদ ভেঙে তৈরি রামমন্দিরে ফাটলের পর ধস নামলো ‘রামপথে’