ভারতের র্যাপ গানের জগতে সাড়া ফেলেছে ‘হিজাবী র্যাপার’ হিসেবে খ্যাত সানিয়া মিস্ত্রী। প্রতিদিন তার ইউটিউব চ্যানেল ও ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ছে।
সানিয়া ৩ বছর আগে র্যাপ গান গাওয়া শুরু করে। তার বাবা রিকশা চালক, এবং মা কর্মজীবী নারী। তবে পরিবারে আর্থিক সংকট তার সৃজনশীলতাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।
মুম্বাইয়ের একটি জনবহুল এলাকায় বেড়ে ওঠা ১৫ বছর বয়সী সানিয়া মিস্ত্রী খুব কম বয়সে কবিতা লিখতে শুরু করে। বন্ধুদের মাধ্যমে পরিচয় হয় র্যাপ গানের সাথে। বন্ধুরাই তাকে গান রেকর্ড ও ভিডিও তৈরিতেও সাহায্য করে।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই কিশোরী ‘সানিয়া এমকিউ’ নামে র্যাপ গান পরিবেশন করে।
সানিয়ার নিজের স্মার্টফোন নেই। গান রেকর্ড করতে সে বন্ধু ও প্রতিবেশীদের ওপর নির্ভরশীল।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘শি দ্য পিপল’কে সাক্ষাৎকারে সানিয়া বলেন, ‘এটা অনেকবার দেখেছি, মানুষ মেধার চেয়ে পরীক্ষার নম্বরের ওপর বেশি জোর দেন। শিক্ষার্থীরা আলোচ্য বিষয়ে কতটুকু জ্ঞান অর্জন করলো, তা আমলে নেওয়া হয় না।’
সানিয়ার নিজের লেখা গান ‘সাচ’ এর কারণে সুনাম অর্জন করেছে। এ গানে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। গানের কথায় হতাশা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘এখানে পরীক্ষায় কত নম্বর পাওয়া গেল, তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
তার পরিশীলিত লেখনী অনেককেই বিস্মিত করেছে। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেন না যে এত কম বয়সী একজন এ রকম গভীর বিষয়ের ওপর কীভাবে গান লিখতে পারে। র্যাপের ক্ষেত্রে তার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা এমিওয়ে বানতাই।
সানিয়া জানান, মা তাকে সবসময় সহায়তা করেছেন। শুরুতে কাছের মানুষরা বিস্মিত হলেও পরে সবাই তার গানের প্রশংসা করেছেন। ফলে, সে র্যাপ গানকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে।
সে আরও জানান, বারবার তাকে ও তার বন্ধুদের বলা হয়েছে যে তারা জীবনে কিছুই করতে পারবে না। সুবিধাবঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার পরিবারের সদস্য হিসেবে এ ধরনের চিন্তাধারা সানিয়াকে বিরক্ত করে।
এ মুহূর্তে সানিয়ার ইউটিউবে ১০ হাজার ও ইনস্টাগ্রামে ২ হাজার ৩০৯ ফলোয়ার আছেন। তবে এ সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
১১ এপ্রিল ২০২২
এনএইচ