বোরেল ফন্টেলস র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সদস্যের চিঠির জবাবে মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন।
জোসেফ বোরেল ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ইভান স্টেফানেকের চিঠির প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, দয়া করে নিশ্চিত হন যে- ইইউ আমাদের মানবাধিকার এজেন্ডাসহ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আসন্ন ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশন এবং সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক উপগোষ্ঠী এই আলোচনাগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য উল্লেখযোগ্য স্থান হবে।
চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি জোসেফ বোরেলকে লেখা এক চিঠিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টেফানেক ইউরোপীয় ইউনিয়নকে র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা অসংখ্য বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
তিনি গত বছরের ১০ ডিসেম্বর র্যাব এবং এর বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথাও উল্লেখ করেন।
এর জবাবে জোসেফ বোরেল ফন্টেলস গত ১৮ মার্চ ইভান স্টেফানেককে একটি চিঠি লেখেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ, দুর্যোগপ্রবণ ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিতে অত্যন্ত সফল হয়েছে। বাণিজ্য, উন্নয়ন সহযোগিতা, অভিবাসন, জলবায়ু পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বের প্রশংসা করে ইইউ।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশের অবদানকে আমরা বিশেষভাবে সাধুবাদ জানাই।
জোসেফ বোরেল বলেন, এই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সত্ত্বেও দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। বিশেষ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার।
তিনি লেখেন, ইউএন কমিটি এগেনেস্ট টর্চার (সিএটি) এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারসহ (ওএইচসিএইচআর) স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
বোরেল বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুম উদ্বেগের বিষয় এবং এজন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ ও চূড়ান্ত তদন্তের পাশাপাশি দায়ীদের পূর্ণ জবাবদিহিতা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) ডিজিটাল মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর অযৌক্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে ‘ডিএসএকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে সরকারের এমন সংকেতকে স্বাগত জানাই।’
২৪ মার্চ ২০২২
সূত্র: প্রথম আলো