একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে যুক্তরাজ্যের অনেক মা-বাবা তাদের নাবালক সন্তানের ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং হ্যাবিট নিয়ে খুব সামান্য পরিমানে জানে। এই বিষয়ে অনেক মা-বাবারই সচেতনতার অভাব রয়েছে।
১,৩২৫ জন পিতামাতা এই জরিপে অংশ নিয়েছিল। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর -কিশোরীদের মধ্যে ৩% ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং হ্যাবিটের সাথে জড়িত বলে মনে করেন তাদের পিতামাতারা।
১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের সাথে মাত্র ১% এই অভ্যাসে জড়িত বলে মনে করেন তাদের অভিভাবকেরা।
এই জরিপ মার্কিন জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক কম কারণ আমেরিকায় নেওয়া জরিপ তথ্যানুযায়ী প্রায় ৩% মিডল স্কুলের শিক্ষার্থী এবং ১৪% উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং হ্যাবিটের সাথে জড়িত।
এই জরিপ তথ্যানুযায়ী বিশেষজ্ঞরা ধারনা করেন, মা বাবারা আসল তথ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। অনেক মা-বাবারা তাদের ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে সঠিক খবর জানেন না।
যুক্তরাজ্যে ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী স্কুলছাত্রীদের ৯% ই-সিগারেট ব্যবহারের সাথে যুক্ত ছিল। যা ২০১৮ সাল হতে প্রায় দ্বিগুণ।
১৫ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে ভ্যাপিং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এই বয়সী মেয়েদের মধ্যে প্রায় এক পঞ্চমাংশ স্বীকার করে তারা ই-সিগারেট ব্যবহারকারী।
ভ্যাপিংয়ের বিষয়ে পিতামাতার মতামত সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের। তারা বলে, বেশিরভাগ পিতামাতা (৪৮ ভাগ) বিশ্বাস করেন তাদের সন্তানের ই-সিগারেটের অভ্যাস থাকলে তারা অবশ্যই জানতেন। অনেক পিতামাতারা বলেছেন যদি তাদের সন্তানেরা ই-সিগারেট ব্যবহার করতো তাহলে নিশ্চয়ই তারা অন্তত গন্ধ পেতেন।
প্রতিবেদনে পিতামাতাকে এই ব্যাপারে সতর্ক করা হয়, ” পিতা -মাতার ভুল উপলব্ধি বা ভুল ব্যাখ্যার কারণে অনেক সময় সঠিক তথ্য বের হয়ে আসে না।”
ভ্যাপগুলি সিগারেটের মতো প্রকট গন্ধ দেয় না, ই-সিগারেট স্টিক প্রায়শই ইউএসবি লাঠি বা অন্যান্য নিরীহ বস্তুর মতো দেখায় এবং ডিসপোজেবল করাও একদম সহজ। ই-সিগারেট কেনা, ব্যবহার এবং ফেলে দেয় একদম সহজ বিধায় মা বাবা এই ব্যাপারে খবর রাখা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানায় জরিপকারী সংস্থাগুলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শয়নকক্ষ, বাথরুম এবং শ্রেণিকক্ষের মতো অঞ্চলে ই-সিগারেট ব্যবহার করা হলেও শিক্ষক এবং পিতামাতার কাছ থেকে আড়াল করা সহজ।
সমীক্ষায় আরও প্রকাশিত হয়েছে যে বেশিরভাগ পিতামাতারা বিশ্বাস করেন না যে তাদের বাচ্চারা ই-সিগারেট গ্রহণ করার সাথে জড়িত। তাই অনেক সময় তাদের অজান্তেই সন্তানেরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। যার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানির তীব্রতা এবং ফুসফুসের ফোলা এবং জ্বালা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তাই জরিপকারী সংস্থাগুলো জানায় ই-সিগারেটের ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়া উচিত এবং সন্তানদের নজরদারিতে আনা অতীব জরুরি।