যুক্তরাজ্যের আশ্রয় হোটেলগুলোতে বসবাসকারী শত শত অভিবাসীর বিরুদ্ধে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ধর্ষণ, ডাকাতি ও গুরুতর শারীরিক আঘাতসহ বিভিন্ন অপরাধে আদালতে হাজির করা হয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৩২,০০০ অভিবাসী এসব হোটেলে অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে ৩৩৯ জনকে ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তোলা হয়েছে।
এ সকল মামলার মধ্যে ৬৪টি ছিল সহিংসতাসংক্রান্ত — যার মধ্যে ABH (Actual Bodily Harm), GBH (Grievous Bodily Harm) এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অভিযোগ রয়েছে। যৌন অপরাধের ঘটনাও সামনে এসেছে, যার মধ্যে ৭টি ধর্ষণের অভিযোগ, একটি প্রকাশ্যে অশালীনতা এবং একটি শিশুর সঙ্গে যৌন যোগাযোগের চেষ্টা অন্তর্ভুক্ত।
একটি ঘটনায় একজন ইথিওপীয় অভিবাসী যুক্তরাজ্যে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে জোর করে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হোটেলে থাকা অভিবাসীদের মধ্যে ১% আদালতে গেছেন, যেখানে সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে সেই হার ২%। তবুও এই অপরাধগুলো সমাজে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এই অভিবাসীরা নারীদের ও মেয়েদের জন্য বাস্তব ঝুঁকি তৈরি করছে। ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এমনকি পুলিশের ওপর হামলার মতো ঘটনা ঘটছে। যারা ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় আসছে, তারা গড়পড়তা ব্রিটিশ নাগরিকের চেয়ে ২৪ গুণ বেশি কারাগারে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের ব্যর্থতা এবং সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলেই এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমি মনে করি, যেই আসুক, তাদের সঙ্গে সঙ্গে ফেরত পাঠানো উচিত — রুয়ান্ডা হোক কিংবা অন্য কোনও দেশ।”
হোম অফিস জানিয়েছে, “যদিও দ্য সানের রিপোর্ট পুরো ব্যবস্থার একটি ক্ষুদ্র অংশ তুলে ধরে, তবুও যারা যুক্তরাজ্যের আতিথেয়তা গ্রহণ করে এখানে এসে অপরাধে জড়ায়, তাদের জন্য কোনও সহানুভূতির জায়গা নেই।”
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স চ্যানেল পার হয়ে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে যৌথভাবে কাজ করছে। “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” নামে একটি নতুন পাইলট স্কিমের আওতায় কিছু অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়ে সমপরিমাণ মানুষকে নতুন আইনি প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ দেওয়া হবে।
চলতি বছরে ইতিমধ্যে ২০,০০০-এর বেশি অভিবাসী ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
১৮ জুলাই ২০২৫