ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)–এর নেতৃত্বে হাই স্ট্রিটে মিনি-মার্ট, ভ্যাপ শপ, নরসুন্দর ও টেকঅ্যাওয়ে দোকানে এক মাসব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, যার ফলে ৯২০-এর বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছেন। অভিযানটি এনসিএ’র ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধরনের হাই স্ট্রিট অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ অবৈধ কর্মসংস্থান এবং অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়ার কারণে ৩৪০টিরও বেশি নোটিশ জারি করেছে, যার ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িওয়ালারা উচ্চ জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন। সম্প্রতি বিবিসি অনুসন্ধানে কুর্দি অপরাধী চক্র ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা বাতিল করার দাবি করেছিল এবং “ঘোস্ট ডিরেক্টর” ব্যবহার করে কোম্পানির কাগজপত্রে ছদ্মনাম রাখার বিষয়টি উদঘাটন করা হয়েছিল।
অভিযান চলাকালীন ২,৭৩৪টি হাই স্ট্রিট দোকান পরিদর্শন করা হয় এবং ১ কোটি ৭ লাখ পাউন্ডের বেশি অপরাধমূলক সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এতে কয়েক মিলিয়ন অবৈধ তামাক ও ভ্যাপ পণ্য, অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি নগদ অর্থ এবং ৭০ কেজি গাঁজা অন্তর্ভুক্ত। শুধু অবৈধ তামাক পণ্যই প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন পাউন্ড শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া ৪৫০টিরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানিজ হাউসে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ন্যাশনাল ইকোনমিক ক্রাইম সেন্টারের পরিচালক র্যাচেল হারবার্ট বলেন,
“শহরজুড়ে হাজার হাজার কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে, অপরাধমূলক লাভ ও তার উৎসকে লক্ষ্য করে। শত শত হাজার ক্ষতিকর ও অবৈধ পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং ১ কোটি পাউন্ডের বেশি নগদ অর্থ, ব্যাংক হিসাব ও অপরাধী সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।”
এনসিএ অনুমান করছে, যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর কমপক্ষে ১২ বিলিয়ন পাউন্ড অবৈধ অর্থ উপার্জিত হয়, যা পরে পাচার বা পুনরায় অপরাধমূলক কাজে বিনিয়োগ করা হয়।
বিবিসি অনুসন্ধানে প্রকাশিত নেটওয়ার্ক এবং অবৈধ দোকানের কার্যক্রমে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেবার পার্টির ২৫ জন এমপি “ডজি দোকান বন্ধ করুন” প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন। গ্রেট গ্রিমসবাই ও ক্লিথরোপসের এমপি মেলানি অন নেতৃত্বে এই দল নতুন আইন এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
হোম অফিসের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ড্যান জারভিস বলেন,
“অপরাধীরা এসব অবৈধ দোকান ব্যবহার করছে গুরুতর সংগঠিত অপরাধ, মানি লন্ডারিং ও অবৈধ কর্মসংস্থানের আড়াল হিসেবে। আমরা যৌথভাবে কাজ বাড়িয়েছি, যাতে অপরাধী নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা যায় এবং যারা নোংরা অর্থে লাভবান হচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনা যায়।”
চার্টার্ড ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস ইনস্টিটিউট (CSTI) বিবিসিকে জানিয়েছে,
“আমাদের সদস্যদের কাছে হাই স্ট্রিটে সংঘটিত সংগঠিত অপরাধই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি।”
CSTI আশা করছে, কর্মকর্তাদের আরও বেশি সম্পদ ও ক্ষমতা প্রদান করা হবে যাতে অবৈধভাবে পরিচালিত ব্যবসা দ্রুত বন্ধ করা যায় এবং অপরাধমূলক কার্যক্রম রোধ করা যায়।
অভিযানটি যুক্তরাজ্যের প্রতিটি পুলিশ ফোর্স, ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস, এইচএম রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস এবং হোম অফিস ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্টের যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে

