সোমালিয়ান শরণার্থী হান্নাদ হাসান, যিনি কিশোর ফুটবলার কিয়ান প্রিন্সকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছিলেন, তাকে যুক্তরাজ্য থেকে সোমালিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।
২০০১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত সোমালিয়া থেকে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন হাসান। কিন্তু মাত্র পাঁচ বছর পর, ২০০৬ সালে, ১৫ বছর বয়সী কিয়ান প্রিন্সকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তিনি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
লন্ডনের এজওয়্যারে এক স্কুলের বাইরে মারামারি থামাতে গেলে কিয়ানকে গলায় জড়িয়ে ধরে বুকের মাঝখানে ছুরি চালান হাসান। ঘটনাস্থলেই কিয়ান মারা যান। সে সময় হাসানের বয়স ছিল ১৭।
আদালত হাসানকে অন্তত ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। গত বছর তার মুক্তির আবেদন নাকচ করা হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে, ৩৫ বছর বয়সে, তাকে সোমালিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়।
কিয়ান প্রিন্স কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স (কিউপিআর) ক্লাবের যুব দলের উদীয়মান খেলোয়াড় ছিলেন। ২০১৯ সালে সমর্থকদের ভোটে ক্লাবের মাঠের নাম রাখা হয় ‘কিয়ান প্রিন্স ফাউন্ডেশন স্টেডিয়াম’। পরে সেটি আবার ‘লোফটাস রোড’ নামে ফিরিয়ে আনা হয়।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক পল ওয়ার্সলি বলেন, “কারও জীবন কেড়ে নেওয়া সবসময়ই ভয়ংকর। কিন্তু এমন এক কিশোরের প্রাণ নেওয়া, যিনি প্রতিভাবান, জনপ্রিয় এবং যার সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ছিল — এটি ভাষার বাইরে।”
রায়ের পর কিয়ানের বাবা জানান, “আমরা খুব খুশি, মনে হচ্ছে আকাশ ছুঁয়েছি।”
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, “বিদেশি নাগরিকরা যদি আমাদের দেশে এসে অপরাধ করে, তবে তারা যেন আর রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেব।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের পর থেকে আমরা ৪ হাজার ৪৩৬ জন বিদেশি অপরাধীকে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করেছি, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।”
কিয়ান প্রিন্স ফাউন্ডেশন বর্তমানে ছুরিকাঘাত এবং যুব সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করছে, যাতে কিয়ানের মৃত্যুকে একটি ইতিবাচক বার্তায় রূপান্তর করা যায়।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৯ জুন ২০২৫