ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর করোনা শনাক্তের পর স্বেচ্ছা আইসোলেশনের ঘোষণা দিয়েছেন ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা। এই তালিকায় রয়েছেন, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মাইকেল, স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও ওইসিডি-এর সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাঙ্গেল গুর। এদের সবাই সম্প্রতি মাখোঁর সংস্পর্শে এসেছেন।
এর আগে ম্যাক্রোঁর করোনা পজিটিভের খবর বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয় বলে জানায় বিবিসি।
যেখানে ম্যাক্রোঁ সাতদিনের জন্য আইসোলেশনে থাকবেন বলে এক বিবৃতিতে জানায় ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্যালেস।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইইউ সম্মেলনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশ নিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। যেসব সভায় ইউরোপিয়ান শীর্ষ অনেক নেতা ও কর্মকর্তারা ছিলেন। ফলে তারাও এখন সেফল-আইসোলেশনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। যেখানে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী নিজ থেকেই সেলফ-আইসোলেশনে যাওয়ার উদ্দ্যেগ নিয়েছেন।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মার্টিনের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কোভিড-১৯ ফলাফল নেগেটিভ। তবে তিনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত করে দিচ্ছেন। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্যাসতেক্স (৫৫) ও স্পিকার রিচার্ড ফেররান্ড (৫৮) স্বেচ্ছা আইসোলেশনে আছেন বলে তাদের নিজ নিজ দপ্তর থেকে জানানো হয়।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের করোনা নেগেটিভ আসলেও তিনি কোয়ারেন্টাইনে থেকে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। এ দিকে, পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিও কস্তা (৫৯) তার সব আনুষ্ঠানিক সফর বাতিল করেছেন। করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই তিনি স্বেচ্ছা আইসোলেশনে চলে গেছেন। প্যারিসে গত বুধবারে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করেছিলেন পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের সংস্পর্শে আসার পর বেলজিয়াম প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডি ক্রু ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী হাভিয়ের বেটটেলও স্বেচ্ছা আইসোলেশনে চলে গেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিবৃতিতে দিয়েছেন লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী বেটটেল।
এর আগে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ৪২ বছর বয়সী এ প্রেসিডেন্ট কোভিড-১৯ পরীক্ষা করান এবং ফলাফল পজিটিভ আসে। তবে ম্যাক্রোঁ কীভাবে ভাইরাসটিতে সংক্রমিতে হলেন কিংবা কাদের সংস্পর্শে তিনি এসেছিলেন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি ওই বিবৃতিতে।
ফরাসি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ম্যাক্রোঁ এখনও দেশ পরিচালনার ‘দায়িত্বে’ রয়েছেন এবং তিনি এখন দূর থেকে কাজ করবেন।
ফ্রান্সে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় এ সপ্তাহ থেকে রাতের কারফিউ জারি করা হয়েছে। মহামারি শুরুর পর থেকে ফ্রান্সে ২০ লাখ মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয় এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৫৯ হাজার ৪শ জন। যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এ তথ্য জানায়।
১৮ ডিসেম্বর ২০২০
এনএইচ