২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে অবস্থিত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে এক লাখেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।
চলতি সপ্তাহের বুধবার এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে ফরাসি উপকূল থেকে ১০০ জনেরও বেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ হোম অফিসের পরিসংখ্যান অনুসারে, বৃহস্পতিবার ১৪টি নৌকায় চড়ে যুক্তরাজ্যে উপকূলে পৌঁছেছেন ৭৫৫ জন অনিয়মিত অভিবাসী।
এর মধ্য দিয়ে, ২০১৮ সালে থেকে দেশটিতে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা এক লাখে পৌঁছালো। এছাড়া, ২০২৩ সালের শুরু থেকে একদিনে প্রবেশ করা অভিবাসীদের পরিসংখ্যানে ৭৫৫ জন এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে ৯৯ হাজার ৯৬০ জন অনিয়মিত অভিবাসী ছোট নৌকায় চ্যানলে পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছেন।
ব্রিটিশ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালও অভিবাসী আগমনের ক্ষেত্রে রেকর্ড বছর ছিল। যেখানে ৪৫ হাজার ৭৫৫ জন ছোট নৌকায় দেশটিতে এসেছিলেন৷ অপরদিকে, চলতি বছরের শুরু থেকে ইতিমধ্যে ব্রিটিশ ভূখণ্ডে পা রেখেছেন ১৫ হাজার ৮১ জন অনিয়মিত অভিবাসী৷
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অভিবাসী নৌকার প্রবাহ বন্ধ করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চ্যানেল পাড়ি দেয়ার হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কমে এসেছিল। তবে নতুন করে এই পরিসংখ্যান আবার বাড়তে শুরু করেছে।
চ্যানেল এবং উত্তর সাগরের স্থানীয় ফরাসি মেরিটাইম পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৮০টি নৌকায় প্রায় আট হাজার ১৫০ জন অভিবাসী জুনের শুরু থেকে জুলাইয়ের শেষের মধ্যে চ্যানেল অতিক্রম করার চেষ্টা করেছেন। ২০২২ সালের একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল প্রায় সাত হাজার ৭০০ জন।
লন্ডন এবং প্যারিস যৌথভাবে চ্যানেল পারাপার বন্ধ করার চেষ্টা করছে। ফরাসি উপকূলে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ও নজরদারি প্রযুক্তি বাড়ানো হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে উপকূলে সক্রিয় একটি ফরাসি পুলিশ সূত্র বলেন, “আমরা যত বেশি সদস্য বাড়াচ্ছি, অভিবাসীদের সংখ্যা ততই বাড়ছে। চ্যানলে পারাপারের চেষ্টা এখনও ‘তীব্র’ বলেও স্বীকার করে সূত্রটি।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, “এটা এমন নয় যে আমরা এখানে এসেছি বলে অভিবাসীরা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মানব পাচারকারীরা কৌশল পরিবর্তন করে অন্যদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন৷ যাতে করে অভিযানে শুধু কয়েকটি নৌকা আটকানো যায়।”
স্থানীয় অভিবাসন সংস্থা ইতুপিয়া৫৬-এর সমন্বয়কারী অ্যামেলি মোয়ার্ট জানান, ‘‘ পুলিশের নজরদারি অপেক্ষমাণ অভিবাসীদের সংকল্পকে দুর্বল করে না। সংশ্লিষ্টদের শেষ লক্ষ্য থাকে চ্যানেল অতিক্রম করা। আতঙ্কিত হলেও তারা যাত্রা করবে। যতক্ষণ না যুক্তরাজ্যের দিকে এসব ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ অভিবাসন রুট এবং ফ্রান্সে মর্যাদাপূর্ণ অভ্যর্থনা ব্যবস্থা নেয়া হবে না, ততদিন এই অঞ্চলে দুঃখজনক ঘটনা ঘটবে।”
প্রস্থানের জন্য অনুকূল আবহাওয়াকে বেছে নেন অভিবাসীরা। বুধবার এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে দুটি নৌকায় থাকা ৬৬ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মেরিটাইম প্রেফেকচুর।
ইতুপিয়া৫৬ প্রকাশিত এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি উপকূলে শক্তিশালী পুলিশি উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও উপকূলের ভিড় করছেন অভিবাসীরা৷
এম.কে
১৭ আগস্ট ২০২৩