যুক্তরাজ্যের আশ্রয়ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদ। সোমবার সংসদে তিনি এমন একটি প্যাকেজ উন্মোচন করবেন, যা বেআইনি অভিবাসন দমনে “আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বিস্তৃত সংস্কার” হিসেবে বিবেচিত হবে বলে সরকার জানিয়েছে।
মাহমুদের নতুন প্রস্তাবে আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন ও আর্থিক সহায়তা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিশ্চিত থাকবে না। বরং সহায়তা হবে “বিবেচনাধীনে”—অর্থাৎ যাদের কাজ করার সক্ষমতা আছে বা যাদের ব্যক্তিগত সম্পদ রয়েছে, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা না দেওয়ার ক্ষমতা পাবে সরকার। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অভিবাসন চাপ হ্রাস এবং ব্যবস্থায় ন্যায্যতা আনার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সরকারের দাবি, যুক্তরাজ্যের উদার মানবিকতা বহুদিন ধরে বিপদাপন্ন মানুষদের আশ্রয় দিয়ে আসছে, তবে সেই উদারতা বর্তমানে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বেআইনি অভিবাসীদের আকর্ষণ করছে। হোম সেক্রেটারি বলেছেন, অভিবাসনের প্রবাহ ও পরিমাণ স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর ওপর “অপরিমেয় চাপ” সৃষ্টি করছে, এবং এই সংস্কার সেই চাপ কমাতেই নেওয়া হচ্ছে।
তবে নীতির পরিবর্তন আশ্রয়ভোগীদের বড় অংশকে প্রভাবিত করবে না বলে সরকারি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে। কারণ অধিকাংশ আশ্রয়প্রার্থীকে কাজের অনুমতি না দেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে, তা পরিবর্তন করা হবে না। বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ মানুষ আশ্রয় সহায়তা পাচ্ছেন, যাদের অধিকাংশই সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আবাসনে থাকেন। এর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখনো হোটেলে অবস্থান করছেন, যদিও লেবার সরকার ২০২৯ সালের মধ্যে হোটেল ব্যবহার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়–আবাসনে থাকা ৮,৫০০ মানুষের কাজ করার অনুমতি রয়েছে, কারণ তারা ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে এসে পরবর্তীতে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। নতুন নীতির অধীনে এই শ্রেণির ব্যক্তিরাই সহায়তা প্রত্যাহারের সম্ভাব্য ঝুঁকিতে থাকবেন।
রবিবার সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থিত হয়ে শাবানা মাহমুদ এই প্রস্তাবগুলোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এই পরিবর্তনগুলো ব্রিটেনের আশ্রয়ব্যবস্থায় “নিয়ন্ত্রণ পুনঃস্থাপন” করবে এবং একইসঙ্গে প্রকৃত বিপদাপন্ন মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

