সরকারী একটি নতুন টাস্কফোর্স সপ্তাহে প্রত্যেক শিক্ষকের কমপক্ষে পাঁচ ঘন্টা কাজের চাপ কমানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।বিশেষজ্ঞরা আশা করেন নতুন উদ্যোগটি নেওয়া হলে শিক্ষকের উপর চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
শিক্ষক নিয়োগ এবং তাদের কাজে আরো পারদর্শী করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করে টাস্কফোর্স। এই লক্ষ্যে এই সপ্তাহে প্রথমবারের মতো টাস্কফোর্স বৈঠক করবে বলে খবরে জানা যায়।
এই বছরের শুরুর দিকে, একটি সরকারী প্রতিবেদন ফাঁস হয়েছে বলে জানা যায়। যাতে উল্লেখ রয়েছে অনেক বা অধিকাংশ শিক্ষক সপ্তাহে ৬০ ঘন্টা বা তারও বেশি সময় কাজ করছেন। যা “অগ্রহণযোগ্য” এবং এই কারণে অতিরিক্ত কাজের চাপের শিক্ষকতা পেশা পুরোপুরি ছেড়ে যাওয়ার কথা বিবেচনা করেন অনেক শিক্ষকেরা।
যদিও ট্রেড ইউনিয়নগুলি টাস্কফোর্সকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে তারা এখনও সন্দিহান মন্ত্রীদের “সিস্টেমিক পরিবর্তন” আনার ইচ্ছা আছে কিনা তা নিয়ে।
যুক্তরাজ্যের শিক্ষকেরা বেতন বৃদ্ধি ও নানা সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন।
এই বছরের শুরুর দিকে, ইংল্যান্ডে টিচিং স্টাফদের ৬.৫% বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পর ধর্মঘটের ইতি টানা হয়।
খবরে জানা যায়, সরকারী টাস্কফোর্সটি ১৪ সদস্যের যেখানে চারটি প্রধান প্রশিক্ষণ ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষাবিদ এবং বিশেষজ্ঞদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কুল অ্যান্ড কলেজ নেতাদের সাধারণ সম্পাদক জেফ বার্টন জানান, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক লক্ষ্যগুলি ক্রমাগত মিস করা হচ্ছে যার কারণে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দ্রুত শিক্ষকতা পেশা হতে বিদায় নিচ্ছেন তাতে শূন্যতা বাড়ছে। অভিজ্ঞতা একদিনে তৈরি হয় না।
তিনি আরও যোগ করেছেন, ” অভিজ্ঞতার অভাবে কম লোকের উপরে বাড়ছে কাজের চাপ। তাই যারা অভিজ্ঞ শিক্ষক আছেন তাদের জন্য এই পেশা হয়ে গিয়েছে অনেকটা শাস্তিমূলক। প্রকৃতপক্ষে কাজের চাপ মোকাবেলা করার জন্য এবং এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছুটা প্রস্তুতি থাকা উচিত ।”
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ হেডটিচার্সের সাধারণ সম্পাদক পল হোয়াইটম্যান বলেছেন, “এই বছর সরকারের সাথে আমাদের বিরোধ শুধু বেতনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। মূলত এটি ছিল অসহনীয় কাজের চাপ এবং পরিদর্শন সহ নানা চাপ নিয়েও।”
তিনি জানান যে টাস্কফোর্সটি একটি “গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” নিয়েছে, তবে শুধু পদক্ষেপে নয় ফলাফল বের করে আনা হয়ে পড়েছে জরুরি।
যুক্তরাজ্য সরকারের স্কুল বিষয়ক মন্ত্রী নিক গিব বলেছেন, “আমরা গত দশকে স্কুলের মান বাড়তে দেখেছি যা অভিজ্ঞ শিক্ষক ব্যাতিত সম্ভব ছিল না। তবে আমরা কাজের চাপ সম্পর্কে শিক্ষক এবং স্কুল নেতাদের উদ্বেগ শুনেছি। এ কারণেই সরকার শিক্ষকদের কাজের চাপ হ্রাস করার ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর। যাতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের তাদের সর্বোত্তম অভিজ্ঞতা হতে শিক্ষাদান করতে পারেন।
এম.কে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩