12.3 C
London
May 4, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

অনিরাপদ রুয়ান্ডায় ব্রিটেনের অভিবাসী স্থানান্তর চুক্তি বেআইনি বলেছেন আদালতে আইনজীবীরা

পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডাকে ‘অনিরাপদ’ দাবি করে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের একদল আইনজীবী বলেছেন, রুয়ান্ডায় অভিবাসী পাঠাতে ব্রিটেনের পরিকল্পনা আইন সম্মত নয়৷ লন্ডনের আপিল আদালতে দাঁড়িয়ে এ কথা জানান আইনজীবীরা৷

আশ্রয়প্রার্থীদের যুক্তরাজ্যে না রেখে, প্রায় চার হাজার মাইল দূরের দেশ রুয়ান্ডায় স্থানান্তর করতে চায় প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকার৷ এজন্য দেশটির সঙ্গে ১৪ কোটি পাউন্ডের একটি চুক্তিও করেছে তারা৷ তৈরি করা হচ্ছে আবাসন৷

ফ্রান্স থেকে ছোটো ছোটো নৌকা নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসা আশ্রয়প্রার্থী এবং অন্যান্য রুটে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রবাহ বন্ধ করা দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের শীর্ষ অগ্রাধিকার৷

 

 

 

 

আশ্রয়প্রার্থী বা অভিবাসীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে গত জুনেই প্রথম ফ্লাইটটি পরিচালনার চেষ্টা করেছিল যুক্তরাজ্য৷ কিন্তু ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের সিদ্ধান্তে পিছু হটতে বাধ্য হয় ব্রিটেন সরকার৷ আইনি পদক্ষেপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো অভিবাসীকে রুয়ান্ডায় স্থানান্তর করা যাবে না সিদ্ধান্ত দেয় আদালত৷

ডিসেম্বরে লন্ডনের হাইকোর্ট যুক্তরাজ্য সরকারের নীতিটি আইনসম্মত বলে রায় দিয়েছে৷ কিন্তু আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থাসহ সিরিয়া, সুদান, ইরাক, ইরান এবং ভিয়েতনামের আশ্রয়প্রার্থীরা৷

তাদের আইনজীবীরা বলেছেন, রুয়ান্ডাকে একটি ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’ বলে সরকারের যে যুক্তি দিচ্ছে, তা ত্রুটিপূর্ণ৷

গত সপ্তাহে লন্ডনের আপিল আদালতে শুরু হয়েছে চার দিনের শুনানি৷ শুনানির শুরুতেই আইনজীবী দলের সদস্য রাজা হুসেইন বলেন, রুয়ান্ডা একটি কর্তৃত্ববাদী একদলীয় রাষ্ট্র৷ বিরোধীদের জেল, নির্যাতন ও হত্যা পর্যন্ত করে এই রাষ্ট্রটি৷ ফলে এই দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নিরাপদ হতে পারে না৷

 

 

 

 

আদালতে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরাও জোরের সঙ্গে বলছেন, রুয়ান্ডার সঙ্গে চুক্তির সময় সার্বিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার৷

অবশ্য রুয়ান্ডাও বলেছে, অভিবাসীদের সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হবে৷ ব্রিটেনের সঙ্গে করা চুক্তি তাদের জন্য আরো সম্ভাবনা তৈরি করবে৷

মামলার তিন বিচারকের একজন প্রধান বিচারপতি ইয়ান বার্নেট বলেন, রুয়ান্ডার নিরাপত্তার বিষয়টিই হয়তো মূল সমস্যা হবে।

গত বছরের মার্চে ‘স্মল বোটস বিল’ নামে একটি নতুন আইনের প্রস্তাব করেছে যুক্তরাজ্য সরকার৷ এই আইনের আওতায় ইংলিশ চ্যানেলে পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসর প্রত্যাশীদের ‘‘অপরাধী’’ হিসেবে গণ্য করা হবে। ফলে আশ্রয়ের অধিকার হারাবেন তারা৷ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত অথবা তৃতীয় দেশে পাঠানো হবে৷

 

 

 

সুনাক প্রশাসন মনে করে, এই আইন মানব পাচারকারীদের ব্যবসায়িক মডেল ভেঙে ফেলবে৷ কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, এটি অবাস্তব, অনৈতিক এবং অকার্যকর৷ তাদের দাবি, এমন আইন দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের চ্যানেল পাড়ি দেয়ার চেষ্টা থামানো যাবে না৷

২০২২ সালে ছোটো নৌকা নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটির দক্ষিণ উপকূলে আসেন ৪৫ হাজার অভিবাসী৷ যা তার আগের দুই বছরের তুলনায় অন্তত দশ গুণ বেশি৷

চলতি বছর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অন্তত ৫৬ হাজার আশ্রয়প্রার্থী যুক্তরাজ্যে আসতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ২০২২ সালের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি৷ সম্প্রতি, আদালতে উপস্থাপন করা যুক্তরাজ্য সরকারের এক নথিতে এমন আভাস দেয়া হয়েছে৷

চলতি বছর, এখন পর্যন্ত চ্যানেল পাড়ি দিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ব্রিটেনে পৌঁছেছেন৷ আর এ বছরের মার্চ পর্যন্ত এক লাখ নয় হাজারেরও বেশি আশ্রয়প্রার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করেছে যুক্তরাজ্য৷ এদের মধ্যে ৪৮ হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে রাখা হয়েছে হোটেলে৷ আবাসনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিদিন ৬২ লাখ পাউন্ড খরচ হচ্ছে৷

আরো পড়ুন

ইংল্যান্ডের লকডাউন উঠে যাওয়া এক মাস পেছাবে

অনলাইন ডেস্ক

বরিস জনসনের ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার ১৫ বছর ধরে অনলাইনে

গাড়ি চালানোর সময় ডিভাইস হাতে নেয়াই নিষিদ্ধ হচ্ছে ব্রিটেনে

অনলাইন ডেস্ক