নেট জিরো বা কার্বন বৃদ্ধি শূন্যে নামিয়ে আনতে হাউজিং সেক্টরে বেশ কিছু গুরুত্ব পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। এরমধ্যে রয়েছে এনার্জি পারফর্মেন্স সার্টিফিকেট এবং গ্রিন মর্গেজের নতুন নতুন উদ্যোগ। এই পরিবর্তন ও কার্যক্রমগুলো ব্রিটেনে বাড়ি কেনা-বেচা বা ভাড়া দেয়া-নেয়ায় ভালো প্রভাব রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিবেশে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ২০০টি দেশের কর্ম-পরিকল্পনা নির্ধারণে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর ব্যাপী চলা এই সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো। দীর্ঘ দিন ধরে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে যে ক্ষতিকারক গ্যাস পরিবেশে ছড়িয়েছে-তার প্রভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়েই চলেছে। আর এর পরিণতিতে আবহাওয়া দিনে দিনে হয়ে উঠছে চরমভাবাপন্ন। আর এই পরিবর্তনের গতি প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজেন ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ।
কপ-২৬ কি?
১৯৯২ সালে এই সম্মেলনের প্রস্তাব করে জাতিসংঘ। ১৯৯৫ সালে প্রথম সম্মেলন হয় বার্লিনে। জাতিসংঘের উদ্যোগে গঠিত কপের প্রথম সম্মেলন অর্থাৎ কপ-১ হয়েছিল ১৯৯৫সালে। ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) আয়োজনে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে এবার হচ্ছে ২৬তম সম্মেলন।
এবারের কপ-২৬ সম্মেলনে চারটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে:
১. জলবায়ু অর্থায়ন
২. কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা
৩. পরিবহন খাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা
৪. বনাঞ্চল সংরক্ষণ
যুক্তরাজ্য সরকার এ বছর অক্টোবরে ‘Net Zero Strategy: Build Back Greener’ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনে অংশ হিসেবে ব্রিটিশ জ্বালানি মন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডস বলেন, নেট জিরো স্ট্র্যাটেজি ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য জুড়ে ৪ লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত কর্মসংস্থানকে সহায়তা করবে।
নেট জিরো স্ট্রাটেজি কি?
বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হবে, ঠিক সেই পরিমাণ কার্বন বিভিন্ন উপায়ে গ্রহণ করে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের চাপ কমানোর বিষয়টিকেই নেট জিরো বলে অভিহিত। ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্য, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে জীবাষ্ণ জ্বালানির ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে ফেলা।
কপ-২৬ এবং ইউকে হাউজিং সেক্টর?
নেট জিরো স্ট্রাটেজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকার হাউজিং সেক্টরের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো হচ্ছে:
পরিবেশবান্ধব হিট বয়লার
যেসব হিট বয়লার কম কার্বন নিঃসরণ করে, যেমনঃ ইলেক্ট্রিক হিট পাম্প, হাইড্রোজেন বয়লার ব্যবহার করতে হবে। তিন বছর মেয়াদী বয়লার আপগ্রেড স্কিম এর অংশ হিসেবে হাউসহোল্ড সমূহ বয়লার আপগ্রেড করার জন্য সর্বোচ্চ ৫০০০ পর্যন্ত গ্র্যান্ড পাবে। এবং ২০৩৫ সালের পর কোন গ্যাস চালিত বয়লার বিক্রয় করা যাবে না।
এনার্জি পারফর্মেন্স সার্টিফিকেট
কার্বন নির্গমন এবং বিদ্যুৎ শক্তির খরচ কমানোর জন্য ব্রিটেন সরকার এনার্জি পারফর্মেন্স সার্টিফিকেট (ইপিসি) প্রবর্তন করেছে। আপনি বিলেতে প্রপার্টি ক্রয়, বিক্রয়, ভাড়া এবং সংস্কার/তৈরি করতে চাইলে আপনার এটি প্রয়োজন হবে।
ইপিসি সার্টিফিকেট দ্বারা আপনার প্রপার্টিতে কি পরিমাণ এনার্জি খরচ হয় এবং আপনার প্রপার্টি কতটা এনার্জি ইফিসিয়েন্ট তার বিস্তারিত রিপোর্ট পাবেন। আপনার প্রপার্টিকে A থেকে G এর মধ্যে একটি রেটিং করা হবে। নেট জিরো স্ট্রাটেজির অংশ হিসেবে এখন থেকে কোন প্রপার্টি ক্রয়, বিক্রয় এবং ভাড়া দেয়ার জন্য নুন্যতম E রেটিং এর EPC সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে।
গ্রিন মর্গেজ
যুক্তরাজ্য সরকার মার্চ ২০২১ সালে ‘2020_Provisional_emissions_statistics_report’ নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে হাউজিং সেক্টর থেকে ৬৭.৭ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরন হয়েছে। যা ব্রিটেনের মোট কার্বন নিঃসরন এর ২০.৮%। হাউজিং সেক্টরের কার্বন নিঃসরন কমানোর জন্য এনার্জি এফিসিয়েন্ট মর্গেজ প্রোগ্রাম বা গ্রিন মর্গেজ প্রবর্তন করা হয়েছে।
গ্রিন মর্গেজের মাধ্যমে এনার্জি এফিসিয়েন্ট হাউজ কেনার সময় মর্গেজ লেন্ডারা কম ইন্টারেস্ট রেইটে লোন দিবে অথবা ক্যাশ ইনসেনটিভ দিবে। এনার্জি এফিসিয়েন্ট মর্গেজ প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে বাড়ির মালিকরা এনার্জি এফিসিয়েন্টে আপগ্রেডের জন্য লোন নিতে পারবেন।
১৮ নভেম্বর ২০২১
এনএইচ
মর্গেজ সংক্রান্ত যেকোনো ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথে নিচের টেলিফোন নাম্বারে অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
Email: info@benecofinance.co.uk
Tel: +4402080502478