10.4 C
London
April 25, 2024
TV3 BANGLA
ফিচারশীর্ষ খবর

ব্রেক্সিটের অন্তহীন দর কষাকষিতে আপত্তি থেকেই যাচ্ছে

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয়েছে আগেই। কিন্তু উভয় পক্ষের মধ্যে বিচ্ছেদ–পরবর্তী সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে এখনো চলছে তুমুল দর-কষাকষি।

কয়েক দফায় আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর স্থানীয় সময় রোববার (৬ ডিসেম্বর) ব্রাসেলসে আবারও আলোচনায় বসেছে উভয় পক্ষ। একে চুক্তিহীন বিচ্ছেদ ঠেকানোর শেষ সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলোতে।

 

মার্চ থেকে শুরু হয় ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণের এই আলোচনা। একটি ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী উভয় পক্ষ। বেশির ভাগ বিষয়ে একমতও তারা। কিন্তু গোল বেঁধেছে মূলত তিনটি বিষয়ে।

 

১. জোটের বর্তমান নীতি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের জলসীমায় অবাধে মাছ শিকার করতে পারে প্রতিবেশী ইইউভুক্ত দেশগুলো। ইইউ চায় এ সুযোগ বলবৎ রাখতে। অন্যথায় ইইউর বাজারে ব্রিটিশদের শুল্কমুক্ত মাছ রপ্তানির সুযোগ দিতে রাজি নয় তারা।

২. বাজার প্রতিযোগিতায় ‍যুক্তরাজ্য যাতে অন্যায় সুবিধা নিতে না পারে, সে জন্য কর্মী অধিকার ও পরিবেশবিষয়ক আইনগুলো সমান রাখার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য যাতে কোম্পানিগুলোকে সরকারি সহায়তা দিতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে চাইছে ইইউ।

৩. যুক্তরাজ্য চুক্তির কোনো নিয়ম ভঙ্গ করলে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সাজা দিতে চায় ইইউ। আর উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে, তা সুরাহার দায়িত্ব ইইউ আদালতের কাছেই ন্যস্ত রাখতে চায় তারা।

 

তবে তিনটি বিষয়ে যুক্তরাজ্য আপত্তি জানিয়ে বলেছে, ব্রেক্সিট বা ইইউ জোট থেকে বেরিয়ে আসার মূল উদ্দেশ্যই হলো ইইউর অধীনতা ত্যাগ করা। দেশের সার্বভৌম অধিকার ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো শর্তে রাজি হতে পারবে না তারা।

 

এই তিন ইস্যুতে দ্বিমতের কারণে ৪ ডিসেম্বর লন্ডনে আলোচনা থমকে যাওয়ার পর উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা বিবৃতি দিয়ে জানান, বিষয়টি তারা নিজ নিজ নেতাদের অবহিত করবেন। নেতারাই আলোচনার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

৫ ডিসেম্বর ইইউ প্রেসিডেন্ট আরসুলা ভন্ডার লিয়ন ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে কথা বলেন। তারা চুক্তির জন্য আরও চেষ্টা চালাতে একমত হন। এরপরই যুক্তরাজ্যের পক্ষে সমঝোতাকারী লর্ড ফ্রস্ট ছুটে যান ব্রাসেলসে। ইইউর পক্ষে সমঝোতা করছেন মিশেল বার্নিয়ে।

 

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয়। দীর্ঘ কয়েক বছর নানা নাটকীয়তার পর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি একটি বিচ্ছেদ চুক্তি (উইথড্রয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট) সম্পাদনের মধ্য দিয়ে সেই রায় কার্যকর হয়।

তবে বাস্তবে উভয় পক্ষের মধ্যকার সম্পর্কের কোনো বদল এখনো হয়নি। বিচ্ছেদ–পরবর্তী সম্পর্ক নির্ধারণের জন্য চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে উভয় পক্ষ। আগামী ১ জানুয়ারি বাস্তবিক অর্থে দীর্ঘ ৪৫ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটবে।

 

চুক্তি সম্পাদনের পর সেটি ইইউর ২৭টি ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। সদস্যদেশগুলোর আপত্তি থাকলে তা সুরাহা করতে হবে। প্রতিটি সদস্যদেশের পার্লামেন্টের অনুমোদনের পর চুক্তিটি ইইউ পার্লামেন্টে পাস করতে হবে। একইভাবে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টেও চুক্তিটি পাস হতে হবে। আর সব কটি কাজ ৩১ ডিসেম্বরের আগেই শেষ করতে হবে। তাই দর-কষাকষির সময় আর নেই বললেই চলে।

 

এদিকে আগামী বৃহস্পতিবার ইইউ নেতারা এক সম্মেলনে মিলিত হবেন। ওই সম্মেলনেই চুক্তিটি অনুমোদন দিতে চান তারা।

 

চুক্তি সম্পাদনে ব্যর্থ হলে উভয় পক্ষের জন্য তা মারাত্মক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষতির কারণ হবে। কেননা, উভয় পক্ষের মধ্যে শুল্কমুক্ত অবাধ বাণিজ্য সুবিধা আর থাকবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে লেনদেন করতে হবে, শুল্ক আরোপ হবে। ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক কাজ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সীমান্তে গাড়ি পারাপারে সৃষ্টি হবে জটিলতা।

 

৭ ডিসেম্বর ২০২০
সূত্র: প্রথম আলো

আরো পড়ুন

রমজানের শুভেচ্ছাবার্তায় বাইডেনের মুখে চীনের উইঘুর এবং মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের কথা

ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বাংলাদেশি আইনজীবী

হোম অফিসকে যেভাবে আনন্দময় করে তুলতে পারবেন

অনলাইন ডেস্ক