TV3 BANGLA
সারাদেশ

মাকে রাস্তায় ফেলে দিলো সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত ৮ ছেলেমেয়ে!

বৃদ্ধা মায়ের ৮ ছেলে ও মেয়ের কেউ ডাক্তার, কেউ ব্যাংকার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ব্যবসায়ী। সবাই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তারপরও কোনো সন্তানের বাড়িতেই মাথা গুঁজবার ঠাঁই হলো না এই মায়ের। শেষ পর্যন্ত এই শতবর্ষী বৃদ্ধা মাকে সন্তানরা গাড়ি থেকে ফেলে দিলেন একটি বাজারের পাশে। এমনই এক বেদনাদায়ক ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুগান্তর।

 

প্রতিবেদনে জানা যায়, ঢাকার ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের রশ্মিমপুর গ্রামের মরিয়ম বেগম নামে এক শতবর্ষী বৃদ্ধা মাকে সন্তানরা গাড়ি থেকে ফেলে দিলেন একটি বাজারের পাশে। এলাকাবাসী তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।

 

ডাক্তার, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ীসহ ওই বৃদ্ধা মায়ের ৮ ছেলে ও মেয়েদের সবাই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তারপরও কোনো ছেলের বাড়িতেই তার মাথা গুঁজবার ঠাঁই হলো না। তার পিতার দেওয়া ১৫ বিঘা জমি সন্তানদের লিখে না দেওয়ায় এ পরিণতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গ্রামবাসী। শেষ পর্যন্ত তার দায়িত্ব নিলেন গ্রামবাসী।

 

জানা যায়, ওই গ্রামের প্রয়াত মো. আসুরুদ্দিন সরকার নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তাঁতশিল্পসহ কয়েকশ বিঘা জমি ছিল আসুরুদ্দিন সরকারের। তাই একমাত্র মেয়ে মরিয়ম বেগমের সুখের কথা ভেবে তাকে ১৫ বিঘা জমি লিখে দিয়ে বিলাসবহুল একটি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়ে বিয়ে দেন। এরপর জামাতা মো. আব্দুস সালামকে ঘরজামাই হিসেবে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেন।

 

পরবর্তী সময়ে মরিয়ম বেগম ৬ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তানের জননী হন। প্রত্যেক সন্তানকেই তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। বড়ছেলে মো. আক্তারুজ্জামান একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। ছোট ছেলে ডা. মো. হুমায়ুন কবীর বিসিএস কর্মকর্তা (ডাক্তার)। তিনি একটি সরকারি আবাসিক হাসপাতালে কর্মরত। সাখাওয়াত হোসেন সাকী ও আব্দুল্লাহেল বাকী নামকরা ব্যবসায়ী ও আলমগীর হোসেন বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি করেন।

 

তাদের কারও সংসারে কোনো অভাব অনটন নেই বলেই গ্রামবাসীর দাবি। শুধু বৃদ্ধা মাকে ভরণপোষণ করতে যেন তাদের অভাবের শেষ নেই। ক্ষুধার জ্বালায় সদা ছটফট করেন এই বৃদ্ধা মরিয়ম বেগম। ক্ষুধার যন্ত্রণা মেটাতে  ঘুরে বেড়ান এদিক-সেদিক। না খেয়ে তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়ে গেছে।

 

সন্তানদের কাছে বিষয়টি বারবার বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই শতবর্ষী বৃদ্ধা মাকে চিকিৎসার কথা বলে গাড়িতে তুলে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তার ওপর ফেলে রেখে যায়। তার গোঙানির শব্দ পেয়ে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মো. আব্দুল লতিফের বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

 

বৃদ্ধার ছেলে মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে। তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমাদের নিয়ে এমন মিথ্যাচার করছেন। আমরা তাকে যথেষ্ট ভরণপোষণ দিচ্ছি ও সেবাযত্ন করছি।

 

মো. আব্দুল লতিফ নামে এক গ্রামবাসী বলেন, বৃদ্ধার ছেলেরা যদি তার এত ভরণপোষণ দিচ্ছে ও সেবাযত্ন করছে তাহলে তার এ করুণদশা কেন? শুধু তাই নয়, গ্রামবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিচ্ছেন কেন?

 

২০ অক্টোবর ২০২১
নিউজ ডেস্ক

আরো পড়ুন

‘মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২০ হাজার টাকা করা হবে’

অনলাইন ডেস্ক

করোনায় বাংলাদেশে একদিনে রেকর্ড ১০১ জনের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

যুক্ত হলো পদ্মার দুই পাড়