TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

মানব ও মাদক পাচারকারীদের নতুন কৌশলঃ ছোট নৌকায় অভিবাসী দিয়ে হেরোইন পাচার

ব্রিটেনে ছোট নৌকায় পৌঁছানো আশ্রয়প্রত্যাশীদের মধ্যে মাদক পাচারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সীমান্তে এক্স-রে ও স্ক্যানিং ব্যবস্থা চালুর দাবি উঠেছে। টেলিগ্রাফের গোপন তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, মানব পাচারকারীরা অভিবাসীদেরকে হেরোইন ও কোকেন পাচারের বিনিময়ে কম দামে চ্যানেল পার হবার প্রলোভন দিচ্ছে।

 

টেলিগ্রাফের প্রকাশিত গোপন রেকর্ডিংয়ে দেখা যায়, সংঘবদ্ধ মানব ও মাদক পাচার চক্র অভিবাসীদেরকে বিশেষ “ভিআইপি ক্রশিং”-এ পাঠাচ্ছে, যেখানে নারীদের ও শিশুদের সঙ্গে যাত্রা করালে নিরাপত্তা শঙ্কা কম হবে—এমন ধারণা অপরাধীদের। পাচারকারীদের নির্দেশনায় অভিবাসীরা ব্রিটেনে পৌঁছানোর পর হোম অফিস–হোটেল থেকেই ড্রাগ সরবরাহ করে স্থানীয় ডিলারদের হাতে তুলে দেয়।

শেডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ বলেন, “ছোট নৌকায় আসা অভিবাসীদের ড্রাগ পাচারকারী হিসেবে ব্যবহার ঠেকাতে শাবানা মাহমুদকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। সীমান্তে এক্স-রে ও বিশেষ স্ক্যানিং চালু করা না হলে ব্রিটেনে ড্রাগ প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না।”

মানব পাচার ও মাদক পাচারের যৌথ নেটওয়ার্ক ব্রিটিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর কাজে লাগাচ্ছে বলে তদন্তে জানা গেছে। এনসিএ জানিয়েছে, মাদক পাচার পদ্ধতিতে নতুন পরিবর্তনগুলো তারা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ বলেন, “অবৈধ অভিবাসীদের আগমনের পরপরই এক্স-রে অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু তাতেই শেষ নয়—তাদের আটক ও বহিষ্কার করতে হবে। রিফর্ম সরকার হলে অবৈধ অভিবাসন একবারেই শেষ করা হবে।”

হোম অফিসের বর্তমান নির্দেশনা অনুযায়ী, সমুদ্র থেকে উদ্ধার হয়ে আসা অভিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রথম অগ্রাধিকার থাকে তাদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা। নির্দেশিকায় দেখা যায়, সীমান্তে মাদক অনুসন্ধানের বিষয়টি মূলত লরিতে লুকানো অভিবাসীদের ক্ষেত্রেই উল্লেখ আছে; শরীরের অভ্যন্তরে লুকানো ড্রাগ শনাক্ত করতে এক্স-রে বা স্ক্যানিংয়ের নির্দেশ নেই।

নির্দেশিকায় আরও বলা হয়, অভিবাসীদের প্রাথমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরই তাদের প্রশাসনিকভাবে আটক করে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেওয়া হয়। সেখানে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব মূলত পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন বা পালিয়ে যাওয়ার উপকরণ অনুসন্ধানের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়—অভ্যন্তরীণভাবে লুকানো ড্রাগ শনাক্তের কোন কাঠামো নেই।

মেডিক্যাল পরীক্ষা বা ভাইরাল টেস্টিংয়ের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ থাকলেও ড্রাগ বহনের সম্ভাবনা নিয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নির্দেশিকায় পাওয়া যায়নি। ড্রাগ সম্পর্কিত বিষয় পাওয়া গেছে একমাত্র যানবাহন তল্লাশির প্রসঙ্গে—যেখানে অভিবাসীরা লরির ভিতরে লুকিয়ে আসতে পারে বলে অনুমান করা হয়।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে ভাড়াটিয়াকে বিভ্রান্ত করার দায়ে বাড়িওয়ালাকে £১১,০০০ জরিমানা

যুক্তরাজ্যে গাড়ি চুরি মহামারিঃ প্রতি সাড়ে ৮ মিনিটে উধাও একেকটি গাড়ি

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে এইচআইভি প্রতিরোধে ভয়াবহ বৈষম্য: নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে