যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে দেশটির নতুন অভিবাসী আইন বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান। তার আশঙ্কা, এর ফলে দেশটিতে আশ্রয় চাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকারের প্রধান লক্ষ্য ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্য আসতে চাওয়া ছোট নৌকাগুলোকে ঠেকানো। নতুন এই বিলটি এপ্রিলে অনুমোদন দিয়েছে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ।
উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডসে পাস হলে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের দ্রুত আটক করে নিজ দেশে বা রুয়ান্ডার মতো তথাকথিত ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশে‘ ফেরত পাঠানো সহজ হবে বলে জানায় যুক্তরাজ্য সরকার।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ফোলকার ট্যুর্ক জেনেভায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের দৃষ্টিতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ এই বিল একটি বিশেষ পথে এলে অভিবাসীদের আশ্রয় প্রার্থনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।‘‘
কোনো দেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হলে সেদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করাটা মানবাধিকার সংস্থার প্রধানের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পশ্চিমা কোনো দেশের ক্ষেত্রে এমন আনুষ্ঠানিক উদ্বেগ প্রকাশের ঘটনা বেশ বিরল।
জেনেভায় ব্রিটিশ কূটনৈতিক মিশনের এক মুখপাত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা জানিয়েছেন, “আমরা অবৈধ অভিবাসন বিল নিয়ে নিয়মিত মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি।”
পাশাপাশি তিনি বলেন, তার দেশ মনে করে দেশটির অভিবাসন নীতি, এমনকি রুয়ান্ডায় অভিবাসীদের ডিপোর্ট করার বিষয়টিও আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক এবং জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনেরও পরিপন্থি নয়।
অবশ্য, জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধানের বক্তব্যে এ নিয়ে অসন্তোষের বার্তাই পাওয়া গেছে।
১৯৫১ সালে গৃহীত জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন অনুসমর্থন করা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য ছা়ড়াও আরো ১৫০টি দেশ।
কিন্তু সাক্ষরকারী দেশগুলোরই কনভেনশন না মানা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ট্যুর্ক বলেন, “এখন দেখতে পাচ্ছি এই ফ্রেমওয়ার্কটিকে বাতাসেই উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।”
এম.কে
০১ জুন ২০২৩