17.5 C
London
May 10, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যের আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণে প্রস্তুত রুয়ান্ডা

ফরাসি উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে যুক্তরাজ্য সরকারের ‘বিতর্কিত’ বিলটি পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর এবার তাতে সম্মতি দিয়েছেন ব্রিটিশ রাজা৷ বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের রাজা চার্লসের সম্মতির মধ্য দিয়ে ‘রুয়ান্ডার সুরক্ষা আশ্রয় ও অভিবাসন বিল’ আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত হলো৷

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিলটি পাস হওয়ার পরপর রুয়ান্ডা জানিয়েছে, আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণে প্রস্তুত তারা৷ রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালির পাশের কাগুগু এলাকায় হোপ হোস্টেল নামের একটি ভবনকে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে৷

হোপ হোস্টেলটি মূলত একটি ছাত্রাবাস৷ ১৯৯৪ সালে দেশটিতে গণহত্যার সময় যেসব কলেজ শিক্ষার্থীরা তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছেন তাদেরকেই এই ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ দেয়া হতো৷ ওইসময়ে মাত্র ১০০ দিনের ব্যবধানে অন্তত আট লাখ তুতসি সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করে হুতুরা৷

এদিকে, আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকারও৷

রুয়ান্ডা সরকারের উপ মুখপাত্র আলাইন মুকুরিলিন্ডা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণ করার জন্য দুই বছর ধরে অপেক্ষা করছে রুয়ান্ডা কর্তৃপক্ষ৷

তিনি বলেন, ‘‘ আশ্রয়প্রার্থীরা যদি এখন কিংবা আগামীকালও আসেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন৷’’

মুকুরিলিন্ডা বলেন, ‘‘রুয়ান্ডার সমালোচকেরা এবং যুক্তরাজ্যের বিচারকেরা যে বলেছিলেন এটি নিরাপদ দেশ নয়, এই আইনের মধ্য দিয়ে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে৷’’

‘‘রুয়ান্ডা একটি নিরাপদ দেশ’’, দাবি করেন সরকারের এই উপ মুখপাত্র৷

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হোপ হোস্টেলে অন্তত একশ জন আশ্রয়প্রার্থীকে রাখা যাবে৷ প্রয়োজন অনুযায়ী আগামীতে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আরো আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হবে বলেও জানায় তারা৷

হোস্টেলটির ব্যবস্থাপক ইসমায়েল বাকিনা বলেন, আশ্রয়প্রার্থীরা ব্রিটেন থেকে এখানে আসার পর তাদের বিশ্রামের জন্য নিজ নিজ কক্ষ বুঝিয়ে দেয়া হবে, খাবার দাবার দেয়া হবে এবং কিগালি ও রুয়ান্ডা সম্পর্কে তাদের কিছু ধারণা দেয়া হবে৷

এছাড়াও হোস্টেল চত্বরে তাঁবু খাঁটিয়ে আশ্রয়প্রার্থীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হবে৷ নিরাপত্তার জন্য পুরো হোস্টেল এলাকাতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা৷

হোস্টেল চত্বরে বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে ছোট ফুটবল মাঠ, বাস্কেটবল ও ভলিবলের জন্য আলাদা কোর্ট৷ লাল গালিচা বিছিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে একটি প্রার্থনা কক্ষ৷ যারা ধূমপায়ী তাদের জন্য বিশেষ একটি কক্ষ রাখা হয়েছে বলেও জানান বাকিনা৷

হোস্টেলের ক্যান্টিনেই আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য রান্না-বান্না করা হবে৷ তবে কোনো আশ্রয়প্রার্থী চাইলে নিজেরটা নিজে রেঁধেও খেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ইসমায়েল বাকিনা৷ তিনি বলেন, আশ্রয়প্রার্থীরা হোস্টেল চত্বরের আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন, এমনকি কিগালি সিটি সেন্টারে যাওয়ার অনুমতি থাকবে তাদের৷

বাকিনা আরো বলেন, ইংরেজি এবং আরবিসহ ‘‘আমাদের সঙ্গে নানা ভাষাভাষী মানুষ রয়েছেন, যারা আশ্রয়প্রার্থীদের ভাষা বুঝতে পারবেন৷’’

আশ্রয়প্রার্থীদের আসার প্রথম তিন মাসের মধ্যে নথি যাচাই-বাছাইয়ের কাজটি শেষ করতে চায় রুয়ান্ডা সরকার৷ এরপর কেউ যদি রুয়ান্ডায় থাকতে চান, তাদের সেই সুযোগ দেয়া হবে এবং কেউ যদি নিজ দেশে ফিরে যেতে চান, তাকেও সহযোগিতা দেবে দেশটির সরকার৷

সরকারের উপ মুখপাত্র মুকুরিলিন্ডা জানিয়েছেন, যেসব আশ্রয়প্রার্থী রুয়ান্ডায় থাকতে আগ্রহী হবেন, তাদেরকে পাঁচ বছর পর্যন্ত অর্থনৈতিক থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে রুয়ান্ডা সরকার৷ এই পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের রুয়ান্ডার সমাজে একীভূত হতে হবে৷ তারপর, নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদের করে নিতে হবে৷

সূত্রঃ এপি, রয়টার্স, এএফপি

এম.কে
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আরো পড়ুন

এনএইচএসকে সহায়তায় লন্ডনে ২০০ সেনা সদস্য

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে পেশাদার কর্মীরাও শ্রেণীবৈষম্যের শিকারঃগবেষণা

জনসমক্ষে দায়িত্বে ফিরছেন যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লস