8 C
London
April 28, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

যুক্তরাজ্যে অর্ধেকের বেশি ক্রেতা কমিয়েছে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়

বছরের শুরু থেকেই কেনাকাটায় পরিমিত থাকছেন যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি ক্রেতা অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়েছেন। রেস্তোরাঁয় খেতে পছন্দ করতেন, এমন ক্রেতারা বাইরে খাওয়ার ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
কেপিএমজির গবেষণা বলছে, যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা বিবেচনার ভিত্তিতে ব্যয় কমিয়েছেন। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ক্রেতা রেস্তোরাঁয় খাওয়ার বিল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চলতি মাসের শুরু থেকে জ্বালানি খাতের বাড়তি বিল এবং কর বাড়ানোয় দেশটির তুলনামূলক অল্প আয়ের মানুষ টিকে থাকতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের প্রায় তিন হাজার বাসিন্দাদের নিয়ে একটি জরিপ করে কেপিএমজি। জরিপে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের ৪৯ শতাংশ জানিয়েছেন, এখন অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোয় কম ব্যয় করার পরিকল্পনা করছে তারা। দেশটিতে জ্বালানি ব্যয় অসহনীয় স্তরে পৌঁছেছে, নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে। সংকট মোকাবেলায় মাত্র ৩০ শতাংশ সঞ্চয় অবশিষ্ট আছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে।
যুক্তরাজ্য সরকার গত অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতি মাসে আবাসিক খাতের জ্বালানি বিলের ওপর প্রায় ৬৭ পাউন্ড করে ছাড় দিয়েছে। তবে টেলিকম পরিসেবা সংস্থাগুলো এপ্রিল থেকে অনেক গ্রাহকের জন্য ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বিল বাড়িয়েছে। কেপিএমজির জরিপে অংশ নেয়া ৫১ শতাংশ ব্যক্তি জানিয়েছেন, চলতি মাস থেকে ব্রডব্যান্ডের জন্য তাদের আরো বেশি ফি দিতে হবে। বাকি ৪৯ শতাংশ সেলফোনে ব্যয়ের ব্যাপারেও একই কথা বলেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে ৫৫ শতাংশ ব্যক্তি তাদের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে ৬৩ শতাংশ ব্যক্তি রেস্তোরাঁর খাবার ব্যয় কমিয়েছেন। ইউটিলিটি বিলের উচ্চব্যয়ের প্রভাবেই এ পথে হাঁটছেন যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা।
ক্রেতাদের বিবেচনার ভিত্তিতে ব্যয় কমানো অনেক শপিং মল, পাব ও রেস্তোরাঁর জন্য উদ্বেগজনক হবে। কেননা কোভিডের অর্থনৈতিক আঘাত থেকে পুনরুদ্ধার করতে এখনো লড়াই করতে হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে। ছোট খুচরা ও আতিথেয়তা খাতের ব্যবসায়ীরা গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে দেউলিয়া হওয়ার পথে। কেননা দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষের জ্বালানি খাতের জন্য ঘোষিত ভর্তুকি প্রকল্প গত মাসে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জরিপকৃতদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ ব্যক্তি ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য কম মূল্যে বিক্রি করেন, এমন খুচরা বিক্রেতাদের থেকে কিনছেন। ৩৭ শতাংশ সুপারমার্কেটে নিজস্ব ব্র্যান্ডের এবং মূল্যবান পণ্য বেশি কিনছেন। এছাড়া ৩৩ শতাংশ পণ্য কেনার পরিমাণ কমিয়েছেন এবং ১১ শতাংশ ব্যক্তি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন।
জরিপকৃত ব্যক্তিদের গড় সঞ্চয় ছিল ৭ হাজার ৭৪৪ পাউন্ড। এসব ব্যক্তির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৪ শতাংশই বলেছেন, চলতি মাসে তাদের সঞ্চয়কৃত অর্থ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাচ্ছেন। যাদের সঞ্চয় আছে, তাদের মধ্যে ৪১ শতাংশই বলেছেন, এ বছর এখনো বড় ধরনের কোনো কেনাকাটা করেননি। ৩৪ শতাংশ বলছেন, বছরে বাকি সময়েও অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা থেকে বিরত থাকবেন তারা।
সামগ্রিকভাবে চলতি বছরের শুরুতে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি ক্রেতাদের সমানভাবে প্রভাবিত করেছে। ২৫ শতাংশ ক্রেতাই বলেছেন, বছরের শুরুর তুলনায় এখন বেশি সুরক্ষিত অনুভব করছেন। ২৯ শতাংশ কিছুটা কম সুরক্ষা অনুভব করেছেন এবং ৪৫ শতাংশ জানিয়েছেন, বছরের শুরুতে অর্থনৈতিক অবস্থা যেমন ছিল, বর্তমানে তেমনটাই অনুভূত হচ্ছে।

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্য মৃদু মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদহার অপরিবর্তিত

জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আততায়ীর গুলিতে নিহত

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে ভিজিট ভিসায় কাজের সুযোগ