জল, স্থল, এমনকি বাতাসেও বিচরণ করা ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এবার মানুষের অণ্ডকোষেও। সম্প্রতি টক্সিকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ওই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।
এ বিষয়ে গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকেরা মানুষ এবং কুকুরের অণ্ডকোষ থেকে টিস্যু সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তারা দেখেছিলেন—মানুষ এবং কুকুর উভয়ের অণ্ডকোষেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে। তবে কুকুরের চেয়ে মানুষের অণ্ডকোষে তিন গুণ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি দেখে তারা সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে কুকুরের অণ্ডকোষের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে যেখানে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে ১২২.৬৩ মাইক্রোগ্রাম, সেখানে মানুষের অণ্ডকোষে পাওয়া গেছে ৩২৯.৪৪ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক।
এ অবস্থায় বিজ্ঞানীরা মত দিয়েছেন, বর্তমানে প্লাস্টিকের দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিষয়টি এখন মানুষের শরীরে সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৪৭টি কুকুর এবং ২৩ জন মানুষের অণ্ডকোষ পরীক্ষা করে তারা এখন পর্যন্ত ১২ ধরনের প্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন। এসব প্লাস্টিকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ছিল পলিথিন। মূলত ২০১৬ সালে পোস্টমর্টেম করা কিছু মৃত ব্যক্তির টেস্টগুলো বিশ্লেষণ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তিদের বয়স ছিল ১৬ থেকে ৮৮ বছর বয়স পর্যন্ত।
গবেষক দলটির নেতৃত্ব দেওয়া জিয়াওঝং ইউ জানিয়েছেন, মানুষের অণ্ডকোষে প্লাস্টিক উপস্থিতির বিষয়ে তারা আগেই সন্দেহ করেছিলেন। তবে এর পরিমাণ যে এত বেশি হবে, তা তারা কল্পনাও করেননি।
জিয়াওঝং মনে করেন, এভাবে প্লাস্টিক দূষণ বাড়তে থাকলে মানুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পেতে শুরু করবে। মানুষের স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকার জন্য এটিও কারণ হতে পারে বলে জানান তিনি। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তাই বড় একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে মাইক্রোপ্লাস্টিক।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২২ মে ২০২৪