২৯ বছরের যুবতী ফেনেলা ফক্স থাকতেন পর্তুগালে। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে নাম করেছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা দেড় লক্ষের বেশি। দিনের প্রায় ১৪ ঘণ্টা সময় কাটত সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ ডুবিয়ে। তার এই নেশা ও পরবর্তী পেশা যে অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে তা ভাবতেও পারেননি ফেনেলা। অসুস্থতার শুরু ২০২১ সালে। প্রথম-প্রথম মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা। পরে সেই যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। সেখান থেকে শুরু হয় বমি বমি ভাব, মাথা ঝিমঝিম।
পরে চলাফেরা করতেও সমস্যা হত তার। সমস্যা বাড়তে থাকায় চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন ওই যুবতী। কিন্তু পর্তুগালের চিকিৎসকরা তার অসুখ ধরতে পারেনি। অগত্যা তিনি ব্রিটেনে রওনা দেন। সেখানে তার মা-বাবা থাকতেন। সেখানেই শুরু হয় চিকিৎসা।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ফেনেলা ফক্স জানিয়েছেন, “আমার এমন অবস্থা হয়ে ছিল যে ঠিকমতো হাঁটতে পারছিলাম না। সবসময় অস্বস্তি হত। দিনভর ঝিমিয়ে থাকতাম। বিছানায় শুয়ে থাকতাম সারাদিন। তারপরেও দিনভর ফোন ঘাটতাম। ফলে সমস্যা আরও বাড়ছিল।”
বৃটিশ চিকিৎসকরা ধরতে পারেন ওই যুবতী সাইবার সিকনেস ও ডিজিটাল ভার্টিগো-তে ভুগছেন। এরপর থেকে ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ফেনেলা ফক্স। তারপর থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
বৃটিশ চিকিৎসকরা বলেন, স্থির অবস্থায় থাকলেও মস্তিষ্ক যখন আপনার গতিশীলতা নিয়ে বার্তা পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, মোবাইলে স্ক্রিন ফ্ল্যাশ করছেন, তখন আপনি স্থির থেকেও গতিশীল। এখান থেকেই সাইবার সিকনেসের সমস্যা তৈরি হয়। আবার এই রোগ চোখ ও অন্তঃকর্ণের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করে। চোখ একরকম জিনিস দেখলেও তা মস্তিষ্ক মানতে চায় না। ফলে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসকরা জানান, ভেস্টিবুলার সিস্টেমে গোলমাল হলে ভার্টিগো হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ বা যে সব স্নায়ু দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেই সমস্ত অংশেই সমস্যা দেখা দেয়। এমন কি, কানের ভিতরের অংশে সংক্রমণ হলেও হতে পারে ভার্টিগো। এই রোগ সারাতে মোবাইল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এম.কে
০৬ মার্চ ২০২৩