ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, আর শিগগিরই ফ্রান্সও এই তালিকায় যোগ দেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তকে “সন্ত্রাসবাদের জন্য বিশাল পুরস্কার” আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না।” তিনি আরও ঘোষণা করেছেন, বসতি সম্প্রসারণের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং পশ্চিম তীরের ভূমি সংযুক্তির দাবিও জোরদার হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার ইসরায়েলকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ব্রিটিশ স্বীকৃতির প্রতিশোধ হিসেবে যেন পশ্চিম তীরের কোনো অংশ সংযুক্ত না করা হয়। তিনি বলেন, ইসরায়েলের পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শীর্ষ দল ফাতাহ’র নেতা সাবরি সাইদাম এই ঘটনাকে “ঐতিহাসিক দিন” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আস্থার ভোট। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইসরায়েল সর্বদা শান্তির দাবি করে কিন্তু ফিলিস্তিনি ভূমি দখল ও জনগণকে বাস্তুচ্যুত করতে থাকে।”
লন্ডনে ফিলিস্তিনি মিশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে মিশন প্রধান হুসাম জোমলট মঞ্চে উঠে ঘোষণা দেন, লন্ডনের এই কেন্দ্র এখন থেকে “ফিলিস্তিনি দূতাবাস” নামে পরিচিত হবে। উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং, স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার জন সুইনি এবং এমপি জেরেমি করবিন।
এদিকে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আজ নিউইয়র্কে বৈঠক করছে। সেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে দীর্ঘদিনের দুই-রাষ্ট্র সমাধান প্রস্তাব, যা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে সবচেয়ে কার্যকর পথ বলে বিবেচিত হলেও ইসরায়েল তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।
এমন এক সময়ে যখন গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পথে নতুন অধ্যায় খুলে দিলেও পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫