বৃটিশ দ্বীপ ডিয়েগো গ্রিসিয়াতে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী দুই শ্রীলংকান অভিবাসনপ্রত্যাশীকে অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়ার অনুমতি প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য৷ তবে সেই দেশ ঠিক কোনটি হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি৷
হামিশকা কৃষ্ণমুর্তি এবং অজিত সাজিথকুমার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় অবস্থান করছেন৷
নির্যাতন এড়াতে শ্রীলংকা থেকে পালিয়ে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত বৃটিশ দ্বীপ ডিয়েগো গ্রিসিয়াতে আশ্রয় নিয়েছিলেন হামিশকা কৃষ্ণমুর্তি এবং অজিত সাজিথকুমার৷ সেখানে আত্মহত্যা করা চেষ্টা করলে তাদেরকে আফ্রিকার দেশে রুয়ান্ডায় পাঠানো হয়৷ আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন যাচাই বাছাইয়ের বিষয়ে রুয়ান্ডার সাথে বৃটিশ সরকারের একটি চুক্তি রয়েছে৷
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা, নির্যাতনের শিকার হওয়ার হুমকি থাকায় তাদেরকে শ্রীলংকায় পাঠানো হবে না৷ তবে তৃতীয় কোন দেশে তাদেরকে আশ্রয়প্রদান করা হবে তা নিশ্চিত করা যায়নি৷
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরো ৮৯জন তামিলিয়ানের সাথে নৌকায় করে বৃটিশ দ্বীপ ডিয়েগো গ্রিসিয়াতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন তারা৷ পথিমধ্যে নৌকাটি ভেঙে গেলে তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সাগরে ভাসছিলেন৷ বৃটিশ নৌবাহিনী তখন তাদের উদ্ধার করে দ্বীপটিতে নিয়ে আসে৷ ভারত মহাসাগরের বৃটেনের নিকটবর্তী সমুদ্রে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে ২০২২ সালে দুইশজন শ্রীলংকান আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন৷
তবে যুক্তরাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় তাদের অনেকে হয় নিজ দেশে ফিরে গেছেন অথবা নৌকায় করে ফ্রান্সের দ্বীপ রিইউনিয়নে আশ্রয় নিয়েছেন৷
আশ্রয়প্রার্থীদেরে অনেকেই জানান, শ্রীলংকার স্বাধীনতাকামী উগ্রপন্থি গোষ্ঠী এলটিটিইর সাথে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ তাদের উপর শারিরীক
ও যৌন নির্যাতন চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা৷
আশ্রয় পাওয়ার বিষয়ে বর্তমানে রুয়ান্ডায় থাকা কৃষ্ণমুর্তি জানান, ‘‘আশ্রয় পাওয়ার খবর শুনে আমার খুশি লাগছে৷ তবে আমি উদ্বিগ্ন৷ কারণ আমি জানি না এর জন্য কতো সময় লাগতে পারে৷’’
এই দুই আশ্রয়প্রার্থীর আইনজীবী গিথ কুলাসমেগারাম জানান, যুক্তরাজ্যের আদালত থেকে তিনি একটি স্টে অর্ডার পাওয়ার অপেক্ষা করছেন যেন তাদেরকে আবারো দ্বীপটিতে পাঠিয়ে দেওয়া না হয়৷
উল্লেখ্য দ্বীপটিতে আশ্রয় নেওয়ার পর গত ১ মার্চ আত্মহত্যার চেষ্টা চালান হামিশকা কৃষ্ণমুর্তি এবং অজিত সাজিথকুমার৷ অভিযোগ আছে, সেসময় দ্বীপটি পরিদর্শনরত এক বৃটিশ কর্মকর্তা তাদের জানান যে, তাদেরকে শ্রীলংকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে৷ এই খবর শুনেই তারা আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়৷ এরপর ১৩ মার্চ সেখানকার আরো তিন আশ্রয়প্রার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়৷ পরে তাদের সবাইকে রুয়ান্ডার একটি সেনা হাসপাতালে শারিরীক ও মানসিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়৷