TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ILR সময় ১০ বছরে বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে ক্ষোভ, বর্তমান ভিসাধারীদের মধ্যে আতঙ্ক

যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের (Indefinite Leave to Remain – ILR) সময়সীমা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে দশ বছর করার সরকারি পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিবাসী কর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে হাজারো স্কিল্ড ভিসাধারী পরিবার গভীর অনিশ্চয়তায় পড়বে।

 

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসায় থাকা কেউ পাঁচ বছর ধারাবাহিকভাবে কাজ করলে এবং কর প্রদান করলে ILR-এর জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, সেই সময়সীমা দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়াবে দশ বছর। একইসঙ্গে নাগরিকত্বের পথেও নতুন বাধা যুক্ত হবে, যা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসে আগ্রহীদের জন্য বড় ধাক্কা।

স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসাধারীরা বলছেন, ধারাবাহিক চাকরি বজায় রাখা, একদিনেরও বিরতি না রাখা এবং সামাজিক সুরক্ষা না পাওয়া অবস্থায় ইতিমধ্যেই পাঁচ বছর সামলানো কঠিন—এখন সেটিকে দশ বছরে নেওয়া হবে সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অন্যায্য। একজন ভিসাধারী লেখেন, “আমার স্ত্রী ও আমি ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যে এসেছি। বর্তমান নিয়মে আমরা ছয় মাস পর ILR-এর জন্য আবেদন করতে পারবো। কিন্তু নতুন নিয়ম চালু হলে আরও পাঁচ বছর ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। যারা যুক্তরাজ্যকে নিজেদের ঘর মনে করে, তাদের জন্য এই অনিশ্চয়তা ভীতিকর।”

তিনি আরও বলেন, “যারা ইতিমধ্যেই সময়, অর্থ, কর্মজীবন ও মানসিক বিনিয়োগ করেছেন, তাদের ওপর নিয়ম পরিবর্তন চাপিয়ে দেওয়া অন্যায্য। যদি এমন কঠোর পরিবর্তন আনা হয়, তবে তা ভবিষ্যতের আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত—বর্তমান বাসিন্দাদের জন্য নয়।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন অভিবাসন কমানোর কার্যকর উপায় নয়। ইতোমধ্যেই কাজ ও শিক্ষা ভিসার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তাদের মত, সরকার চাইলে এখানেই নীতি স্থিতিশীল রাখতে পারে।

অনেকে বলছেন, এই নতুন প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য অভিবাসন নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে সমাজের দুর্বল অংশকে বলির পাঁঠা বানানো। এতে ব্রিটেনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এবং দেশটি দক্ষ কর্মীদের কাছে কম আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

এক পাঠকের মন্তব্যে উঠে এসেছে কঠোর বার্তা:

“এটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং অস্থির অবস্থায় থাকা পরিশ্রমী মানুষদের রাজনৈতিক লাভের জন্য ব্যবহার করা। এটি নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনকেই দুর্বল করবে।”

অভিবাসী সম্প্রদায়ের দাবি, সরকার যদি এই নীতি কার্যকর করতেই চায়, তবে অন্তত যারা ইতিমধ্যে স্কিল্ড ভিসায় যুক্তরাজ্যে আছেন, তাদের জন্য তা প্রযোজ্য না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। অন্যথায়, এ সিদ্ধান্তকে “চুক্তিভঙ্গ ও নৈতিক অন্যায়” হিসেবে দেখা হবে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

শ্রমিক সংকট নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার

Electoral Register – নির্বাচনী রেজিস্টার

এনএইচএস ট্রাস্টে মৃত্যু ও চিকিৎসা অবহেলার কারণে ক্ষতিপূরণ মামলার সংখ্যা বাড়ছে