5.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

বিধিনিষেধ তুলে ব্রিটেনের ‘স্বাধীনতা দিবস’ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১৯ জুলাইকে ব্রিটেনের জন্য ‘ফ্রিডম ডে’ বা স্বাধীনতা দিবস বলে বর্ণনা করছেন। কারণ, সরকারের সিদ্ধান্তে এই দিন ইংল্যান্ডে সব কোভিড বিধিনিষেধ উঠে যাবে, চালু হবে সব কর্মকাণ্ড। আর এই সিদ্ধান্তটি নিয়ে তৈরি হচ্ছে তর্ক-বিতর্ক, জন্ম নিচ্ছে আলোচনা সমালোচনা।

 

বেশ কয়েকটি কারণে এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের সিদ্ধান্তটি কি সঠিক? নাকি এটি আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে এর পক্ষে-বিপক্ষে মিশ্র ধ্যানধারণা বিরাজ করছে।

 

এদিকে ব্রিটেন হচ্ছে বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা জনসংখ্যার এক বিপুল অংশকে টিকা দেয়ার পর বিধিনিষেধ তুলতে যাচ্ছে। কাজেই এই টিকা মহামারিকে থামাতে আসলেই কাজ করছে কী-না, তার একটি পরীক্ষা হবে ব্রিটেনে।

 

আরেকটি কারণে ব্রিটেনের দিকে সারা দুনিয়ার বিশেষজ্ঞদের নজর। ইংল্যান্ডে সব বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে নাটকীয়ভাবে, লাফিয়ে লাফিয়ে।

 

সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। অগাস্ট মাস নাগাদ সংক্রমণের দৈনিক সংখ্যা লাখে পৌঁছাতে পারে এমন আশঙ্কাও আছে।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ বিষয়ক বিশেষ দূত ডেভিড নাভারো বিবিসিকে বলেন, ব্রিটেন লকডাউন খুলে দেয়ার মাধ্যমে যে পরীক্ষাটি চালাতে যাচ্ছে, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অনেক দেশই ব্রিটেনের দিকে নজর রাখে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে দেশটির বিশেষায়িত জ্ঞান এবং উচ্চমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার কারণে।

 

তিনি কোভিড-১৯-এর বিষয়ে তিনটি কড়া হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন।

 

প্রথমত, তার মতে, এই করোনাভাইরাসটি খুবই বিপদজনক। দ্বিতীয়ত: সারা বিশ্বে এই মহামারি এখনও সাংঘাতিক জোরালোভাবে ছড়াচ্ছে। আর তৃতীয়ত: এই মহামারি এখনও তার সবচেয়ে খারাপ পর্বটি পার করেছে বলে তিনি মনে করেন না।

 

১৯শে জুলাই থেকে ইংল্যান্ডের প্রায় সব কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ উঠে যাচ্ছে। সরকার এই দিনটিকে ‘ফ্রিডম ডে’ বা স্বাধীনতা দিবস বলে বর্ণনা করলে তা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকরা সব কিছু খুলে দেয়ার এই সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তারা বলছে, এটি খুবই ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং জুয়া খেলার মতো একটা কাজ হতে যাচ্ছে।

 

ওই দিন থেকে ইংল্যান্ডে সব নৈশক্লাব খুলে যাবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম আর থাকবে না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কত লোককে আমন্ত্রণ জানানো যাবে, তার ওপর যে বিধিনিষেধ চলমান, সেটাও উঠে যাবে।

 

লেবার পার্টির একজন এমপি জোনাথান অ্যাশফোর্ড বলেছেন, “সরকার একদিকে যেন গাড়ির এক্সিলারেটর পা দিয়ে জোরে চেপে ধরে আছে, অন্যদিকে সীটবেল্ট খুলে ছুঁড়ে ফেলছে।”

পরিবহণ শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করে যে ট্রেড ইউনিয়ন, সেই ‘ইউনাইট ইউনিয়ন’ বলেছে, গণপরিবহনে মাস্ক পরার নিয়ম তুলে দেয়া একটা ‘চরম অবহেলার’ কাজ। কারণ মাস্ক পরলে সেটি ব্যবহারকারী যেমন নিরাপদে থাকেন, তেমনি গণপরিবহণের কর্মীরাও নিরাপদ বোধ করেন।

 

ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ডাঃ চান্দ নাগপাল বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত খুবই ‘বিপদজনক’ এবং এর একটা ‘মারাত্মক বিধ্বংসী পরিণতি’ হতে পারে।

 

অন্যদিকে ব্রিটেনের নবনিযুক্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, অন্য ফ্লুর সঙ্গে যেভাবে মানুষ মানিয়ে নিয়েছে, এই কোভিডের সঙ্গেও কিভাবে মানিয়ে নিতে হয়, সেটা শিখতে হবে।

 

১৬ জুলাই ২০২১
এনএইচ

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে রাশিয়ার আক্রমণের আশঙ্কা

যুক্তরাজ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সরকার বিপাকে

মেটপুলিশে বর্ণবাদ, বিবিসিতে প্রচারের পর বিরূপ পরিস্থিতি